ব্যাংকিং লেনদেনকে অনেকবেশি সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী করতে ভার্চুয়াল কারেন্সি (ডিজিটাল ট্রেড ক্রেডিট) প্রচলন করতে যাচ্ছে ব্যাংক এশিয়া। গ্রাহক সেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ব্যাংকটি। পাশাপশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠিকেও ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে বিশেষ গুরুত্বসহ কাজ করছে ব্যাংক এশিয়া।
২৪ নভেম্বর ২০১৯(রোববার) রাজধানীর ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটলে আয়োজিত ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। এতে ব্যাংকটির পরবর্তী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, ব্যবসায়িক লেনদেনকে আরও দ্রুততর, সহজ ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে ব্যাংক এশিয়া ভার্চুয়াল কারেন্সি চালু করবে। তবে এই কারেন্সির কোন রূপরেখা জানাননি তারা। ব্যাংক কর্মকর্তারা এটিকে ডিজিটাল ট্রেড ক্রেডিট নামে অভিহিত করেছেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে ভার্চুয়াল কারেন্সি বড় ধরনের আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে প্রভাবশালী ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনকে কোনো কোনো দেশ স্বীকৃতি দিলেও বেশির ভাগ দেশেই এটি নিষিদ্ধ। বাংলাদেশেও বিটকয়েনসহ সব ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রার লেনদেন নিষিদ্ধ।
ভার্চুয়াল মুদ্রার ব্যাপক জনপ্রিয়তার প্রেক্ষিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লিবরা নামে একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা প্রচলনের উদ্যোগ নেয়। যদিও নানা জটিলতায় পরে সেটি আটকে যায়।
ব্যাংক এশিয়ার কথিত ভার্চুয়াল মুদ্রাটি যে বিটকয়েন, লিবরা ইত্যাদির মতো হবে না সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। মূলত ডিজিটাল লেনদেনের একটি সহজ পদ্ধতিকেই তারা ভার্চুয়াল মুদ্রা নামে অভিহিত করছেন বলে জানা গেছে।
বক্তারা জানান, আমরা শুরু করেছিলাম কর্পোরেট ব্যাংকিং দিয়ে। তারপর রিটেইল ব্যাংকিং, এসএমই, এগ্রি, ইসলামিক এবং আজ আমরা ব্যাংকিং সেবার দিগন্ত বিস্তৃত করে পৌঁছে গেছি প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র অসহায় মানুষের দোরগোড়ায়। ব্যাংকিং সেবায় যোগ করেছি নতুন মাত্রা। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মত প্রতিটি ব্যক্তির আরেকটি মৌলিক অধিকার ‘ব্যাংকিং-সেবা-প্রাপ্তি’র অধিকার হিসেবে গণ্য হবে। এটি উন্নয়ন ধারায় একাত্ম হওয়ার অন্যতম প্রধান স্তর।
ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান অর্থ্যাৎ উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে আগামী ৫ বছরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি অর্থ্যাৎ ফিনটেক প্রক্রিয়া আরো কার্যকর করে দ্রুততর ও নিরাপদ সেবা নিশ্চিত করার চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমরা আমাদের সেবা দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা ৬৪টি জেলার ৪৬১ উপজেলায় ৩ হাজার ৩০০টিরও বেশি এজেন্ট আউটলেট এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সুবিধা-বঞ্চিত ব্যাংকিং-সেবা-বর্হিভূত বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা সারাদেশের প্রতিটি ইউডিসি’র মাধ্যমে এ সেবা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ছাড়িয়ে প্রতিটি গ্রামে একটি করে ব্যাংকিং সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে মানুষের ব্যাংকিং সেবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংক এশিয়ার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply