মহান আল্লাহ তাওয়ালা পবিত্র কোরআন শরীফে ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
ব্যবসা হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট মূল্যে কোন কিছু ক্রয় করে তার সাথে মেধা, শ্রম ‘সময় ও কৌশল প্রয়োগ করে আর একটা মূল্যে বিক্রয় করে। এই দুই মূল্যের পার্থক্যই ব্যবসায়ীক মুনাফা যা ইসলামের শরীয়াহ মোতাবেক বৈধ। সুদ হচ্ছে কাউকে কিছু টাকা ধার দিয়ে তার নিকট থেকে কোন রকম কারন (মেধা,শ্রম ও কৌশল প্রয়োগ)ছাড়াই অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে। এই ধার বাবদ প্রদেয় অর্থের অতিরিক্ত অর্থই হচ্ছে সুদ যা ইসলাম ধর্মে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
অনেকেই ব্যাংকিং ব্যবসা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান না রেখে সুদের কারবারের সাথে তুলনা করে গোমরাহী করে।
অন্যান্য ব্যবসায়ী সেক্টরের মতো ব্যাংকিং সেক্টর একইভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে। যেমন RMG সেক্টরে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কাঁচামাল ( Raw Matterials) হিসেবে থান কাপর ইনপুট (Input) হিসেবে গ্রহনের পর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রোডাক্ট (Finish Goods ) হিসেবে শার্ট প্যান্ট তৈরী করে Out put দেয় তেমনি করে ব্যাংকিং ব্যবসায় কাঁচামাল (Raw Materials) হিসেবে বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের নিকট থেকে বিভিন্ন ডিপোজিট স্কীমের মাধ্যমে মূলধন (Fund) সংগ্রহ করে (Input) ফাইন্যান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ার (ব্যাংকার) তাঁর মেধা,মনন ও শ্রম প্রয়োগ করে বিভিন্ন লোন প্রোডাক্ট (Finish Goods) তৈরী করে (Out put) দেয়। গ্রাহকদের ডিপোজিটের উপর যে মুনাফা (ক্রয় মূল্য) দেওয়া হয় এবং লোন প্রোডাক্ট অর্থনীতির বাজারে উপযুক্ত গ্রাহকের নিকট বিক্রয় করে যে মুনাফা পাওয়া যায় এই দুইয়ের পার্থক্যই পরিচালন ব্যয় এবং ব্যবসায়ীক মুনাফা হিসেবে গন্য হয়। একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ইট,বালু,সিমেন্ট ও রড প্রক্রিয়াকরণ করে ভবন তৈরী করলে যদি কনস্ট্রাকশন ব্যবসা হতে পারে,বস্ত্রবালিকা (গার্মেন্টস কর্মী) এর পোশাক তৈরী যদি গার্মেন্টস ব্যবসা হতে পারে তবে একজন ফাইন্যান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ার (ব্যাংকার) এর মেধা ও শ্রমের ফলে উৎপাদিত লোন প্রোডাক্ট বাজারজাতকরনকে ব্যাংকিং ব্যবসা হিসেবে স্বীকার করতে কারও কস্ট হওয়ার কথা না। ব্যাংকিং ব্যবসা অন্যান্য ব্যবসার মতো ইসলামের শরীয়াহ মোতাবেক বৈধ ব্যবসা। যারা ভুল করে ব্যাংকিং ব্যবসাকে সুদের কারবারের সাথে মিলিয়ে ফেলেন তাদের বলব ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন, কোরআন পড়ুন অতপর হালাল হারাম ব্যবসা নিয়ে মতামত দিন।
আ.মু. ব্যাংকার
Leave a Reply